পাসওয়ার্ড অনেক কিছুর জন্যই খুব গুরুত্বপূর্ণ: একটি ফোন বা কম্পিউটার সচল করতে (আনলক) সাধারণত পাসওয়ার্ড দিতে হয়। আপনার ওয়াই-ফাই রাউটার বা ইমেইল প্রোগ্রামে লগইন করতেও একটি পাসওয়ার্ড দরকার হয়। এমনকি, আপনার ডেটা এনক্রিপ্ট করার সময়ও আপনার কাছে একটি পাসওয়ার্ড চাওয়া হয়। অতএব, একটি শক্তিশালী পাসওয়ার্ড আপনার তথ্য সুরক্ষার জন্য বড় পদক্ষেপ। আপনি যত ঘন ঘন আপনার পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করবেন, আপনি তত সুরক্ষিত থাকবেন। আপনার ডিভাইস বা যন্ত্রে অথবা (মেসেজিং) অ্যাকাউন্টে লগইন করতে ব্যবহৃত পাসওয়ার্ড কমপক্ষে প্রতি তিন মাসে একবার বদলানো উচিত। আপনার ওয়াই-ফাই রাউটারের পাসওয়ার্ডটি বছরে অন্তত দুবার পরিবর্তন করা উচিত। অন্য কোনও কাজের জন্য ব্যবহৃত পাসওয়ার্ড বছরে কমপক্ষে একবার পরিবর্তন করুন।
শক্তিশালী পাসওয়ার্ড তৈরির কয়েকটি পরামর্শ:
- > প্রতিটি অ্যাকাউন্টের জন্য ভিন্ন পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন
- > অভিধানে খুঁজে পাওয়া যায় এমন কোনও শব্দ কখনও ব্যবহার করবেন না
- > পরিবারের সদস্য, বন্ধু বা পোষা প্রাণীর নাম বা জন্মতারিখ কখনও ব্যবহার করবেন না
- > দীর্ঘ পাসওয়ার্ড তৈরির চেষ্টা করুন, শক্তিশালী একটি পাসওয়ার্ডে প্রায় ১৫টি অক্ষর থাকে
- > এলোমেলো ছোট হাতের অক্ষর এবং বড় হাতের অক্ষর, বিশেষ অক্ষর বা চিহ্ন এবং সংখ্যা অন্তর্ভুক্ত করুন
জটিল পাসওয়ার্ড মনে রাখতে বেশিরভাগ মানুষের সমস্যা হয়। একটি বিকল্প হচ্ছে পাসফ্রেজ ব্যবহার করা যেমন: WIw8,mlbtmcitt (WhenIwas8,mylittlebrotherthrewmycatinthetoilet)|
আপনার পাসওয়ার্ড পরীক্ষা করতে এবং এটি ভাঙতে একটি নিয়মিত হোম কম্পিউটার বা একটি খুব শক্তিশালী সুপার কম্পিউটারের কতক্ষণ প্রয়োজন সে বিষয়ে একটি ধারণা দিতে বিভিন্ন সহায়ক ওয়েবসাইট রয়েছে। এরকম একটি ওয়েবসাইট হলো: password.kaspersky.com। এ ধরনের ওয়েবসাইটগুলোতে আপনার আসল পাসওয়ার্ড দিলে আপনার সুরক্ষার ঝুঁকি তুলে ধরবে, তাই পরীক্ষা করার জন্য আসলটির মতো একটি অনুরূপ পাসওয়ার্ড দিয়ে পরীক্ষা করে দেখতে পারেন।
আপনি যদি আপনার সব অ্যাকাউন্টের প্রতিটি পাসওয়ার্ড মনে রাখতে না পারেন সেক্ষেত্রে কিপাস (keepass.info) বা সেফ ইন ক্লাউডের (safe-in-cloud.com) মতো অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করুন। তারা আপনার পাসওয়ার্ডগুলো নিরাপদে সংরক্ষণ করে, তথ্যটি এনক্রিপ্ট করে এবং শুধু (খুব শক্তিশালী) মাস্টার পাসওয়ার্ড ব্যবহার করেই এগুলো দেখা সম্ভব। এই টুলগুলোতে সাধারণত একটি পাসওয়ার্ড জেনারেটরও যুক্ত থাকে। আপনার মোবাইলফোনের অ্যাপস্টোরেও আপনি এ ধরনের টুল খুঁজে পাবেন।
পাসওয়ার্ড জমা রাখা এবং সুরক্ষিত করা ছাড়াও, ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড (ওটিপি) ব্যবহারের জন্যও জোর সুপারিশ করা হয়। এই পাসওয়ার্ডগুলো কেবল এক সেশনে জন্য কার্যকর এবং একটি স্ট্যান্ডার্ড পাসওয়ার্ডের সঙ্গে ব্যবহৃত হয়, যা টু-ফ্যাকটর-অথেনটিকেশন (টুএফএ) হিসেবে পরিচিত। ওটিপি টেক্সট মেসেজের মাধ্যমে পাঠানো হয়। গুগল অথেনটিকেটর (অ্যান্ড্রয়েড/আইওএস), অথেনটিকেটর প্লাস (অ্যান্ড্রয়েড) এবং টুএসটিপি অথেনটিকেটর (আইওএস) অ্যাপের মতো স্মার্টফোন অ্যাপ বা একটি বিশেষ টোকেনের মাধ্যমে ওটিপি তৈরি (জেনারেটডে) হয়। ফেসবুক, জিমেইল বা টুইটারের মতো অনেক পরিষেবা এরইমধ্যে ওটিপির ব্যবহার প্রচলন করেছে। কিছু বিকল্প ইমেইল পরিষেবা সরবরাহকারী (যেমন, মেইলবক্স ডট অর্গ) টু-ফ্যাকটর-অথেনটিকেশনের মতো সুবিধা দিয়ে থাকে। ওটিপি ব্যবহারকারী পরিষেবাগুলোর একটি নিয়মিত হালনাগাদ তালিকা twofactorauth.org ওয়েবসাইটে পাওয়া যেতে পারে।