সব সময় গোপনীয় তথ্যের বিষয়ে আলাপ করতে সূত্রের সঙ্গে সামনাসামনি কথা বলার চেষ্টা করুন। টেলিফোনের কথোপকথন তৃতীয়পক্ষ সহজেই শুনে ফেলতে পারে, তাই যেকোনো মূল্যে গোপনীয় আলাপ এড়িয়ে চলুন। স্কাইপ-এর মতো জনপ্রিয় পরিষেবাগুলো এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন বা দুই প্রান্তের সুরক্ষিত যোগাযোগের নিশ্চয়তা দেয় না। এমনকি হোয়াটসঅ্যাপ, ওয়ার বা সিগন্যাল এনক্রিপট ফোনের মতো টুলও দুটি ডিভাইসের মধ্যে কথোপকথনের ক্ষেত্রে শতভাগ সুরক্ষার নিশ্চয়তা দিতে পারে না।
আপনার উৎসের সঙ্গে সাক্ষাতের বিষয়টি নিশ্চিত করার পর বাড়িতে ফোন রেখে যান অথবা সেটি বন্ধ করুন এবং ডিভাইসটি অফলাইন রয়েছে তা নিশ্চিত করতে ব্যাটারিটি খুলে নিন। পাশাপাশি, আপনি একটি ফ্যারাডে কেজ ফোন কেস ব্যবহার করতে পারেন যা বৈদ্যুতিক চৌম্বকীয় সংকেতগুলোকে বাধা দেয়। উইকিলিকসের হুইসেলব্লোয়ারের নাম অনুসারে এটিকে ডাকা হয় ‘এডওয়ার্ড স্নোডেন পদ্ধতি’। এখানে একটি কথোপকথনের গোপনীয়তা নিশ্চিত করতে ডিভাইসটি রেফ্রিজারেটরে রেখে দেওয়া হয়।
এছাড়া, আপনার ফোনে অ্যাপ্লিকেশন সীমিত করতে পারেন। প্রতিবার যখন আপনি একটি অ্যাপ্লিকেশন ইনস্টল করেন, সেটি আপনার ডিভাইসের নির্দিষ্ট ফাংশন, ডেটা বা তথ্যে অ্যাকসেস বা প্রবেশের অনুমতি চায়। বাইরের অনেক সোর্সের কাছ থেকে তখন আপনার ডেটা অরক্ষিত হয়ে পড়ে। ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকা কেলেঙ্কারির কথাই চিন্তা করুন। খুবই নিরীহ একটি অ্যাপ থেকেও কিভাবে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে লাখো মানুষের তথ্য। এবং সেগুলো এমন কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে, যাতে হয়তো কেউই সম্মতি দিত না। তাই, আপনার যদি কোনো অ্যাপ ইন্সটল করতে হয়, তাহলে আপনার ডিভাইসে তাদের প্রবেশের অনুমতি সীমাবদ্ধ করে দেওয়া উচিৎ। তবে এটিও মনে রাখবেন, অ্যাকসেসের অনুমতি ছাড়া অ্যাপ্লিকেশন কাজ করবে না।
বেশ কিছু ব্যাখ্যামূলক ভিডিওর লিংক এবং সুরক্ষা সংক্রান্ত আরও তথ্য পাওয়া যাবে এই লিংকে: investigative-manual.org
সংক্ষেপে, এই অধ্যায়ের লক্ষ্য ছিল একটি সুরক্ষিত কাজের পরিবেশের গুরুত্বকে বোঝানো এবং স্পষ্ট করা যে, কখনই একটি অনুসন্ধানী কাজের ক্ষেত্রে শতভাগ সুরক্ষা নিশ্চিত করা হয়তো সম্ভব হবে না। পরবর্তী অধ্যায়গুলোতে আলোচনা করা হবে: কীভাবে আপনার অনুসন্ধানকে সাজাবেন, সাক্ষাৎকারে সূত্রদেরকে যথাযথ প্রশ্ন করবেন এবং আপনার দরকারি তথ্যটি বের করে আনার জন্য কোন সাক্ষাৎকার-কৌশল সবচেয়ে ভালো।